কেরানীগঞ্জস্থ সামাজিক সংগঠনগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম এর উদ্যোগে উপমহাদেশের প্রখ্যাত দানবীর খান বাহাদুর হাজি হাফেজ মোহাম্মদ হোসেন (রহঃ) এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন কীর্তিমান ও স্মরণীয় ব্যক্তিদের সামাজিক ও মানবিক কীর্তিময় কাজগুলো সবার মাঝে তুলে ধরতে এবং আগামী প্রজন্মের মাঝে এমন ভালো কাজের স্পৃহা ছড়িয়ে দিতে সংগঠনটির এই আয়োজন।
শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টার সময় জিনজিরা সিএনজি স্ট্যান্ড সংলগ্ন সংগঠনটির নিজস্ব কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাঁন বাহাদুর হাজী হাফেজ মোহাম্মদ হোসেন (রহঃ) এর দৌহিত্র জনাব শাহেদ জামান দুলাল। মুফতি আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে ও মোঃ আল-আমিন এর সঞ্চালনায় এসময় এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তারা হাফেজ মোহাম্মদ হোসেনের কর্মময় জীবন দানের ফিরিস্তি তুলে ধরেন।
স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা, কবরস্থান, হাটবাজারসহ বিভিন্ন দানের কারণে ব্রিটিশ সরকার তাকে দানবীর উপাধিতে ভূষিত করেন।
এ সময় কেরানীগঞ্জস্থ বিভিন্ন সামাজিক সাংগঠনের মধ্যে ব্লাড ডোনার্স ক্লাব, সমাজের প্রয়োজনে কালন্দী যুব সংগ, আলোর দিশারী ইসলামী পাঠাগার, হেরার আলো ইসলামী পাঠাগার, আমরা গর্বিত আমরা মুসলমান যুব সমাজ, কেরানীগঞ্জ ফেইসবুক গ্রুপ ও কেরানীগঞ্জ হোপ্সের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, উপমহাদেশের প্রখ্যাত দাতা মরহুম খান বাহাদুর হাজী হাফেজ মোহাম্মদ হোসেন (রঃ) খান বাহাদুর হাজী হাফেজ মোহাম্মদ হোসেন ( রঃ ) বাংলা ১২৫০ সালে ঢাকার কেরাণীগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম মৌলভী পীর মোহাম্মদও ছিলেন অত্যন্ত ধর্ম পরায়ন আলেম ব্যাক্তি। হাজী হাফেজ মোঃ হোসেন (রঃ) জিনজিরা পি এম হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাতা।
জানা যায়, স্কুল প্রতিষ্ঠা করে বেকার ও কর্মরত শিশুদের দৈনিক ১০ পয়সা ভাতা প্রদান করে বই খাতা কিনে দিয়ে জিনজিরা স্কুলে ভর্তি করে দিতেন। খান বাহাদুর হাজী হাফেজ মোহাম্মদ হোসেন (রঃ) অত্যন্ত ধার্মিক ও শিক্ষানুরাগী ছিলেন। তিনি রমজান মাসে জিনজিরা জামে মসজিদ ও স্কুল মজিদে তারাবীহ নামায পড়াতেন। দুই মসজিদে ১৫ দিন করে দু'বার পবিত্র কোরান শরীফ খতম করতেন এবং প্রতিবেশী ও দরিদ্রদের নিজ বাড়ির বহিরাঙ্গনে প্রতিদিন আহার করাতেন। তিনি সাদাসিদে জীবন যাপন করতেন এবং খদ্দরের জামা ও লুঙ্গি পরিধান করতেন। ১৩২২ সালে কোলকাতার নাখোদা মসজিদের নিকট তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে ঢাকা হাউজ ও ঢাকা বিল্ডিং নাম দু'টি বৃহৎ দালান এবং অন্যান্য আরও অনেক সম্পত্তি ওয়াকফ করে যান। ধর্মীয় শিক্ষায় তিনি ছিলেন দারুণ আগ্রহী।
ঢাকার বড় কাটারা হোসাইনিয়া আসরাফুল উলুম মাদ্রাসার তিনিই প্রতিষ্ঠাতা তিনি। এছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসায় অর্থ প্রদান করে। এবং বিভিন্ন মসজিদ নির্মাণ করেন। হজ্জ উপলক্ষে তিনি পবিত্র কাবা শরীফ মুসাফিরখানার জন্য তৎকালীন বিশ হাজার টাকা নিয়মিত ব্যয় করতেন। এই মহান ব্যক্তি বাংলা ১৩৪৫ সালে ৩০ শে ফাল্গুন ইন্তেকাল করেন। ১ চৈত্র রোজ রোববার জিনজিরা ইমাম বাড়ি তার নিজস্ব কবর স্থানে তাকে দাফন করা হয়।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS